Skip to main content

Posts

Showing posts from April, 2021

ওকাম্পো আর রবীন্দ্রনাথ : কিছু অশ্রুত গুঞ্জন

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে ডাকতেন ‘বিজয়া’ নামে। কিন্তু বিজয়া তাঁর আসল নাম ছিল না। নাম ছিল তাঁর ভিক্টোরিয়া1 । ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো। আর্জেন্টিনার এক নারীবাদী লেখিকা এবং বিগত ত্রিশের দশক থেকে ষাটের দশক পর্যন্ত প্রবল প্রতাপে রাজত্ব করা সুর (Sur) নামের এক প্রগতিশীল পত্রিকার সম্পাদিকা। ধারণা করা হয়, রবীন্দ্রনাথের সাথে এক ‘রহস্যময়’ প্লেটোনিক ধরণের রোমান্টিক সম্পর্ক ছিল তাঁর। রবিঠাকুরের একেবারে শেষ বয়সের প্রেম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বয়স তখন ৬৩। আর ওকাম্পোর ৩৪। ১৯২৪ সালে পেরুর স্বাধীনতা সংগ্রামের শত বছরের বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যাবার জন্য জাহাজে উঠলেও মাঝপথে অসুস্থ হয়ে আর্জেন্টিনায় অবস্থান করতে হয় তাঁকে2 । সেখানেই পরিচয় হয় ওকাম্পোর সাথে রবি ঠাকুরের। রবি ঠাকুর আর্জেন্টিনার বুয়েনোস আইরেসের এক হোটেলে (প্লাসা হোটেল) ছিলেন তাঁর সহযাত্রী এবং কাজের সার্বক্ষণিক সঙ্গী লেনার্ড এলমহার্স্টের সাথে। সেখানেই একদিন হাজির হন ওকাম্পো। অবশ্য এমনি এমনি রবাহূত হয়ে রবীন্দ্রনাথের হোটেলে হানা দেননি তিনি। তাঁর রবীন্দ্র-দর্শনের ইচ্ছার পেছনে একটা ছোট্ট ইতিহাস আছে। আসলে প্রথম থেকেই রবীন্দ্র সাহিত্যের গুণমুগ্ধ পাঠিকা ছিলেন ওকাম্পো।

বাংলা গানের তিন তুক কাঠামোকে ভাঙলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

জর্জ বিশ্বাসের গান নিয়ে বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ডের অভিযোগের কেন্দ্রে ছিল গানের প্রিলিউড ও ইন্টারলিউডে যন্ত্র ও সুরের ব্যবহার। তাঁর গাওয়া কিছু গানে এইসব ক্ষেত্রে যন্ত্রের বাদনভঙ্গিমা নাকি গানের কথা ও ভাবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, এইই ছিল তাঁদের অভিমত। রবীন্দ্রনাথের গানের একটা বড় বৈশিষ্ট্য হল, তাঁর পূর্বতন সময়ের বাংলা গানের তিন তুক (স্থায়ী-অন্তরা-আভোগ)-এর কাঠামো ভেঙে তিনি প্রথম বাংলা গানের শরীরে যোগ করলেন একটা নতুন স্তবক – যার নাম সঞ্চারী। এই সংযোগের পেছনে একটি সচেতন ভাবনা রয়েছে যার কথা তিনি বারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলেছেন তাঁর ‘সংগীতচিন্তা’য়। তত্ত্বগতভাবে তিনি মনে করতেন গানের বাণী ও তার অন্তর্গত ভাবের হাত ধরেই গড়ে উঠবে গানের সুরের চলন আর গানের সেই কাব্যগর্ভা আদল তার গভীর ও অনিঃশেষ ব্যাঞ্জনা নিয়ে বেজে চলবে শ্রোতার মনে। এই ভাবনা থেকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে তিনি গানের সুর তৈরি করেছেন প্রথাগত শাস্ত্রীয় ব্যাকরণকে অস্বীকার করে। আর গানের সঞ্চারী সেই ভাবপ্রকাশ ও বিস্তারের এক অনিবার্য মাধ্যম হয়ে দেখা দেয় তাঁর গানে। বস্তুতপক্ষে চারতুকের গানে ওই সঞ্চারী অংশটি মূল গানের ভাবটিকে রসোত্তীর্ণ করার এক আশ্চর্